About Me

My photo
Hello! I am Khan Md.Shadman Rahman Shabab. I am from Bangladesh. I am a student of class ten in one of the prominent institutions of Bangladesh, Monipur High School and College. Besides I am a debater, Quizer and Gamer.

Sunday, May 16, 2021

অসুস্থ প্রতিযোগিতার কবলে পড়ে এ যেন এক প্রাণহীন পোশাক খাত!

একদিন ঘুম থেকে উঠে শুনলেন, দেশের সব পোশাক কারখানা গুলোতে তালা ঝুলছে!এই কথাটা শুনে আপনি নিশ্চয়ই অনেক অবাক হয়েছেন।আপনি চিন্তা করছেন কেন এই সমস্যা দেখা দিবে,তবে আসুন দেখি।আর এতে কোনো সন্দেহ নেই যে বাংলাদেশের পোশাক বিশ্ব দরবারে অনেক সমৃদ্ধ এবং তার ফলস্বরূপ বিশ্বে পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনামের পরই দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ।(তথ্যসূত্রঃ রয়টার্স)। এই অবস্থানটি বিগত বছর কয়েক ধরে রেখেছে আমাদের দেশ।এটি আমাদের দেশের জন্য গর্ব ও সুখকর মুহূর্ত হওয়ার পাশাপাশি আমাদের অর্থনীতির উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে।
যা একটি আশীর্বাদ।বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ স্থান কবে পাবে তা আমার জানা নেই।তবে এটুকু বলতেই পারি বাংলাদেশের প্রতিটি আর.এম.জি. সেক্টরের মূল লক্ষ্য হলো কম বিনিয়োগে অধিক মুনাফা উঠিয়ে আনা।এটা আশা করা অবশ্যই কোনো অপরাধ না।পোশাকের চাহিদা থাকায় রাজধানীতে ও মূল শহর গুলোতেও একের পর এক পোশাক কারখানা গড়ে উঠেছে।যা জিঞ্জিরা,গেন্ডারিয়া,মিরপুর সহ প্রভৃতি এলাকা গুলোতে চোখ মেলালেই বোঝা যায়।বসতবাড়ির পাশাপাশি পোশাক কারখানাও সমানুপাতিক হারে বেড়েই চলেছে।আর তাদের কেউ চায় পোশাক গুলোকে দেশের মানুষের কাছে সরবরাহ করতে,আর কেউ চায় বিদেশে।নিজ দেশের এতো কারখানার পোশাক থাকায় আমার আর আপনার মতো ক্রেতার কাছে অনেক গুলো বিকল্প আছে পোশাক বাছাই করে ক্রয় করার।আমরা ক্রেতারাও সাশ্রয়ী মূল্যে ভালোটাই চাই,আর তার উপর পোশাকে যদি কোনো মূল্যছাড় থাকে তাহলে তো কোনো কথাই নেই!এর ফলশ্রুতিতে শ্রমিক কারখানার মালিকগণ গুলোও আমাদের মতো ক্রেতাদের লক্ষ্য করে তাদের দৃষ্টিতে অধিকতর মুনাফা না করে কম মুনাফায় পোশাক গুলোকে বিক্রি করে দেয়,কারণ তাদের তো পোশাক বিক্রি করতে হবে।তবে এর সরাসরি প্রভাবটি গিয়ে পড়ে পোশাক শ্রমিকদের উপর।কীভাবে?দেখুন যখন কারখানার মালিকগণ তাঁদের আশানুরূপ মুনাফা পাননা তখন শ্রমিক ছাটাই থেকে বেতন-ভাতা কমিয়ে আনার মতো কাজও তাঁরা করেন যাতে তারা আশানুরূপ মুনাফাটা হাতে রাখতে পারেন এবং পুঁজিবাদের রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যই এটি।এমন কী অসুস্থ প্রতিযোগিতার দৌড়ে শ্রমিকগণ গুলোই অমানুসিক পরিশ্রম করছেন,ঘাম ঝড়াচ্ছেন যেটা তাঁদের করবার কথা না এবং এই দৃশ্যটা স্পষ্ট বোঝা যায় বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর শুরুর দিকে।বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্বে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ যখন জেঁকে বসলো তখন অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাধ্যতামূলক সবকিছুতে কোয়ারেন্টাইন এর আদেশ দেওয়া হলো।বন্ধ করে দেওয়া হলো সবকিছু,কিন্তু পোশাক কারখানার মালিকগণ তা মানতে নারাজ ছিলেন এটা আমরা সবাই জানি।শ্রমিকগণ গুলোও তাহলে বেতন পাবেনা এমন কথাও তারা বলেছিলেন।যার কারণে শ্রমিকগণ গুলোও এক প্রকার ভাবে দিশেহারা হয়ে যায়।যার ফলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কারখানা গুলো খুলে দেওয়া হয় এবং নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে রেখে তাঁরা কাজে যান।আর মালিকগণের পক্ষ থেকে অনেক স্বাস্থ্যসেবা ও নিয়ম মেনে কার্যক্রম করার কথা থাকলেও একটিরও পালন সঠিকভাবে করা হয়নি।শুরুর প্রথম দিকে এক প্রসিদ্ধ ও বিখ্যাত এক আর.এম.জি কোম্পানী চরণ(ছদ্মনাম)খুলে দেওয়া হয় এবং মালিক জানান যে তাঁদের পোশাক অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি হবে,আর অনলাইন মাধ্যম পোশাক ক্রয়-বিক্রি অনেক সহজলভ্যও বটে,যার ফলে ক্রেতারাও আকৃষ্ট হয়।কিন্তু এর প্রভাবতো শ্রমিকগণ দের উপর পড়ছে।তাঁদের কথা কয়জনই বা ভাবে?তাঁরা তো এই সমাজের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ।বড় বড় দোকান,সুন্দর কারুশিল্পী কাজের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত দোকান গুলো থেকে আমরা পোশাক ক্রয় করাকে বিলাশিতা মনে করি।কিন্তু এই পোশাক যাদের হাত দিয়ে তৈরী তারাই হয়তো চার-পাঁচ মাস ধরে পাওনা বেতন নেওয়ার জন্য তাঁদের মালিকপক্ষের নিকট আর্জি জানাচ্ছেন।যা কখনো কখনো সংঘর্ষের রূপ পর্যন্ত নিয়ে নেয়। আর এই দৃশ্যের দেখা হরহামেশাই মেলে।যার কারণে আমি লেখাটি যে বাক্য দিয়ে শুরু করেছিলাম,তার বাস্তবতাটা হয়তো পাঠকগণ সামান্য হলেও আঁচ করতে পারছেন যে কেন আমি ঐ বাক্যটি লিখেছিলাম।তবে এতো খালি সমালোচনাই হলো। পোশাক খাতের উন্নয়ন অনেকেরই জানা, যেটা অস্বীকার করবারও উপায় নেই।অনলাইন এসে তা যেন যুগান্তকারী এক রূপ নিয়েছে।কিন্তু এই গল্পের পেছনের দৃশ্য কয়জনই বা জানেন। আমাদের দেশের তৈরি পোশাক গুলো যখন উক্ত কারখানার নিজস্ব দোকানে বিক্রি হয় যা ব্র‍্যান্ড নামে খ্যাত তা মধ্যবিত্তদের ক্ষেত্রে মূল্যছাড় ছাড়া ক্রয় করাটাও তাদের পক্ষ্যে কষ্ট সাধ্য।আর যেই শ্রমিকগণ এই ব্র‍্যান্ডের পোশাক তৈরি করে যাচ্ছেন তাঁদেরই দিনশেষে তাঁদের পরিবারের জন্য বেছে নিতে হয় ফুটপাতের পোশাক,নিজের তৈরি পোশাকও তাঁরা ক্র‍য় করতে পারেন না।যেদিন আমি দেখব যে শ্রমিকগণ তাঁদের তৈরি পোশাক তাঁদের কর্মক্ষেত্রের কারখানার উক্ত দোকান থেকে খুশিমনে ক্রয় করতে দেখব এবং একই সাথে যে শিশু গুলো যারা বর্তমানে শুধু লজ্জাস্থান ঢেকে রাখার মতোই পোশাক পায় এবং দোকানের জড় বস্তু মেন্নেকুইনে সাজানো পোশাক এই বস্ত্রহীন শিশু গুলো দেখে, তারাও যেদিন তাদের পছন্দের পোশাক পরিধান করবে সেদিন আমি বলবো যে বাংলাদেশের পোশাক খাত প্রকৃত অর্থেই উন্নয়ন সাধন করেছে।যার জন্য সরকার,ক্রেতা,বিক্রেতা,মালিক,শ্রমিক সহ সবার ঐক্যতার পাশাপাশি একে অপরের সহযোগীতার প্রয়োজন।আর এভাবেই আমরা যদি পোশাক খাতে কখনো শীর্ষ স্থান দখল করেও ফেলি তাতে যতটা কীনা আনন্দ বোধ করবো তার চেয়ে অনেকগূণ বেশি আনন্দ ও গর্ব বোধ এই কারণে করবো!আপনিও কী আমার সাথে এই চিন্তাধারায় একমত?

No comments:

Post a Comment

অসুস্থ প্রতিযোগিতার কবলে পড়ে এ যেন এক প্রাণহীন পোশাক খাত!

একদিন ঘুম থেকে উঠে শুনলেন, দেশের সব পোশাক কারখানা গুলোতে তালা ঝুলছে!এই কথাটা শুনে আপনি নিশ্চয়ই অনেক অবাক হয়েছেন।আপনি চিন্তা করছেন কেন এই সম...